“ব্যর্থ হওয়ার নানা উপায় আছে, কিন্তু সফল হওয়ার উপায় একটাই ”
আমরা সবাই তার জীবনে সফলতা অর্জন করতে চাই, কিন্তু আদৌ কি সবাই সেই কাজ পারে। পারে না... কারণ যারা সফল হয় তাদের মত অসফল ব্যক্তিরা চেষ্টা করে না। সারাজীবন নিজের ভাগ্যকে দোষ দিতে দিতে জীবন পার করে দেয়। আপনিও সে দলে পড়তে চান...?
আমার মনে হয় কখনই আপনি তা চান না। আসুন সফল হতে হলে জীবনে কি করা উচিত তা নিয়েই আজ আপনাদের বলবো....
এক গ্রামে ছোট্ট একটি চায়ের দোকান ছিল। দোকানটি ছিল একজন মধ্য বয়সী ছেলের। তার পরিবারে মা ও ভাই বোন ছিল। কিন্তু ছেলেটি তার সেই চায়ের দোকান থেকে যা উপার্জনটা করতো তাতে কোনো ভাবেই তাদের পরিবার ঠিকমত চালাতে পারতো না। এজন্য একদিন সে সিদ্ধান্ত নিল যে, সে শহরে গিয়ে বড় কোনো জায়গায় চা বানানোর কাজ করবে। তো সে শহরে গেল, যাওয়ার পর একটি কোম্পানিতে পিয়নের চাকরি নিলো,সেখানে সে চা বানিয়ে ভালই প্রশংসা পেল। কিন্তু কোম্পানির মালিক তার কাছ থেকে ইমেইল অ্যাড্রেস চাইলো। সে বললো তার তো কোনো ইমেইল অ্যাড্রেস নেই। তো মালিক বললো তাহলে আমি তোমার সাথে যোগাযোগ করবো কি করে। এরপর কোন এক অজানা কারনে ছেলেটির সেই চাকরিটি আর করা হলো না।
একদিন সে রাস্তায় একটি সবজি বিক্রেতাকে দেখলো। সে দেখলো লোকটি ভ্যান গাড়িতে করে সবজি বিক্রি করছে। তো ছেলেটিও ভাবলো আমিও তো এটা শুরু করতে পারি। তো যে বলা সেই কাজ, ছেলেটি কাজে লেগে পড়লো, এবং এভাবে কিছুদিন যাওয়ার পর সে নিজের ছোট একটি সবজি দোকান দিয়ে বসলো। এভাবে কয়েক বছর যাওয়ার পর সে নিজের একটি রেস্টুরেন্ট ও খুলে ফেললো, যা কিছু দিন পর বেশ নাম করা একটি রেস্টুরেন্টে পরিণত হলো। তো একদিন এক সেমিনারে একজন সাংবাদিক ছেলেটির কাছ থেকে তার ইমেইল অ্যাড্রেস চাইলো, এবং ছেলেটি বললো যে, ওই ইমেইল অ্যাড্রেস নেই বলেই তো আমি আজ এই জায়গায়।
তো গল্পটি থেকে আপনি কি বুঝতে পারলেন? গল্পটি থেকে বোঝা গেলো যে ওই এক ইমেইল অ্যাড্রেস না থাকাটা তাকে আজ কত বড় একটি স্থানে এনে দিলো। সেদিন যদি ছেলেটি কাছে ইমেইল অ্যাড্রেস থাকতো এবং ছেলেটি সেই কোম্পানির মালিককে ইমেইল অ্যাড্রেস দিত তাহলে হয়তো তাকে সেই কোম্পানিতেই চাকরি করে জীবন পার করতে হতো।জীবনে যদি আপনি সফল হতে চান তবে থেমে থাকা আপনাকে থামিয়ে দেবে। নিজেকে থামিয়ে না রেখে চলতে থাকুন। তাহলে দেখবেন সফলতা আপনার সঙ্গী হতে আপনার দিকে এগিয়ে আসবে।
মনে রাখবেন জীবনে একটি বাধা মনে দশটি সফলতার হাতছানি,জীবন চলার পথে যেখানে বাধা আসবে সেখানে থেমে না থেকে জীবনের গতিবেগ গুড়িয়ে সফলতার দিকে নিয়ে যান।
মুলত সাফল্য জীবনে কে না চায়! কারো কাছে সাফল্য নিজ থেকে এসেই ধরা দেয়, আবার অনেকে হাজার চেষ্টাতেও সাফল্যের সামান্যটুকুও খুঁজে পান না। তবে হ্যাঁ, সাফল্যের রকমফের আছে বটে! কত দূর এগোলে সেটাকে সফল বলা যায়? বা কতটুকু প্রাপ্তিকে ‘সাফল্য’ হিসেবে উল্লেখ করা যাবে, সে হিসাব মেলানো কঠিন। সত্যিকার অর্থে, প্রকৃত সাফল্যের পেছনে থাকে বহুমাত্রিক প্রচেষ্টা। বিজনেস ইনসাইডারের হিসাব বলছে, প্রকৃত সফল ব্যক্তিরা নিজেদের প্রতিদিনই কিছু প্রশ্ন করেন এবং সেই অনুযায়ী কাজ করেন। আপনিও সফল হতে নিজেকে প্রতিদিন নিচের ৬টি প্রশ্ন করতে পারেন, প্রতিদিন।
১. এই কাজটা কি আমি করব...?
বেশি কিছু না ভেবেই চট করে কোনো কাজ করা সফলদের অভ্যাস নয়। কোনো কাজ করার আগে তাঁরা বুঝে শুনে সিদ্ধান্ত নেন যে কাজটা করা তাঁদের জন্য ঠিক হবে কি না। কারণ সময় ও পরিশ্রমের মূল্য তাঁদের কাছে অনেক বেশি।
২. কোন কাজটা আগে করা উচিত...?
ভবিষ্যতের জন্য কোনো কাজ সফল ব্যক্তিরা ফেলে রাখেন না। সবসময়ই কাজের বিষয়ে তাঁরা গুরুত্ব বজায় রাখেন। এর মাধ্যমেই তাঁরা ভবিষ্যতের উপযোগী পরিকল্পনাও করে ফেলেন। মোটেও স্বপ্নে বুঁদ হয়ে থাকেন না
৩. এভাবে কাজ করলে কি দীর্ঘমেয়াদে সাফল্য আসবে...?
তারা শর্টলিস্ট করা বা চটজলদি কাজ নিয়ে পড়ে থাকেন না। সাফল্য তাদের চাই দীর্ঘমেয়াদে। এ জন্য তারা সময় নেন এবং এমনভাবে এমন কিছু কাজই করেন যেগুলোয় সাফল্য আসবে দীর্ঘস্থায়ী ভাবে।
৪. কীভাবে আমি আরো কার্যকরী হব...?
তারা নিজের কাজে সহজেই সন্তুষ্ট হন না। প্রতি মুহূর্তেই চান উপযুক্ত শিক্ষণ, পর্যবেক্ষণ, পরিশ্রম এবং চিন্তার মাধ্যমে নিজের নেতৃত্বগুণের উন্নয়ন ঘটাতে। এভাবেই এরা সবসময় নিজেকে আরো কার্যকরী ব্যক্তিত্বে পরিণত করার উপায় খোঁজেন এবং সেই অনুযায়ী কাজ করেন।
৫. জিনিসটা কীভাবে মজাদার করে তোলা যায়...?
কাজকে কখনো কাঠখোট্টা বা একঘেয়ে রাখতে চান না এরা। সবসময়ই চেষ্টা করেন যেকোনো বিষয়কে কীভাবে মজাদার এবং প্রাণবন্ত করে তোলা যায়। তাঁরা জানেন, একটু হাসি কিংবা মজা অনেক কঠিন বিষয়ের সমাধান করে দিতে পারে।
৬. নিজেকে কীভাবে বিশ্রাম দেব...?
চাইলে দিনভর ভাবনা চিন্তা কিংবা পরিশ্রম করা যায়। তবে একটানা শুধু এসবের মধ্যে থাকলে কর্মক্ষমতা শিগগিরই কমে যায়। এজন্য এঁরা নিজেদের একটি নির্দিষ্ট সময় বিশ্রাম দেওয়ার উপায় খোঁজেন।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন