যেখানে পরিশ্রম নেই,সেখানে সফলতা নেই....

* সফলতার গল্প:

* শুধু বিসিএসের জন্যই পড়েছি,চাকরি করিনি....

আমি গাজীপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০০৪ সালে  বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে এসএসসিতে জিপিএ ২.৮৬ পেয়ে পাশ করি। ফলাফল আশানুযায়ী না হওয়ায় খুব হতাশ হয়ে পড়ি এবং ঐ বছর কলেজে ভর্তি হওয়া থেকে বিরত থাকি,ঠিক করতে পারছিলাম না আমার কি করণীয়। পরবর্তীতে অনেক চিন্তা ভাবনা করে ২০০৫ সালে ভোলা সরকারি কলেজে মানবিক বিভাগে ভর্তি হয়ে যাই।

এরপর থেকে শুরু হলো আমার নতুন উদ্যমে পড়াশুনা। ২০০৭ সালে মানবিক বিভাগ থেকে জিপিএ ৪.৩২ পেয়ে উপজেলায় প্রথম হই। তারপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে  ভর্তি পরীক্ষার অপেক্ষায় থেকে বাদ পড়ি।পরিবার সবার ইচ্ছে ছিল ঢাকা থেকেই পড়তে হবে, তাই ঢাকার বাইরের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা না দিয়ে সরকারি বাংলা কলেজে ভূগোলে ভর্তি হই। ভূগোল থেকে অনার্স পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণীতে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করি। এবং মাস্টার্স পরীক্ষায় দ্বিতীয় শ্রেণীতে পাশ করি।

আমি অনার্সের পড়া মিরপুর পাবলিক লাইব্রেরিতে পড়তাম। তখন দেখতাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক ভাই বিসিএসের জন্য পড়ছে এবং ক্যাডার ও হচ্ছে। তখন মনে মনে ভাবতাম তাহলে আমি কি পারবো..? একে বাংলা কলেজে ভূগোলে পড়েছি তার উপর আবার এসএসসির জিপিএ কম তাই মনে মনে ভাবতাম চেষ্টা করে ভাইভা পর্যন্ত গেলেও কম জিপিএ এর কারণে বাদ পড়ে যাব। ৩২ তম বিসিএসে এসে দেখি আমার ভূগোলের এক ভাই পুলিশ ক্যাডারে চান্স পেয়ে গেল।

এরপরই ভাবলাম চেষ্টা করে দেখি আমার পক্ষেও সম্ভব। এরপরই শুরু করলাম পাবলিক লাইব্রেরীতে আমার বিসিএস প্রস্তুতি। সেই ২০১৩ সাল থেকে আমরা চার বন্ধু মিলে শুরু করলাম বিসিএস প্রস্তুতি। ৩৫ তম বিসিএসে ভাইভা ফেল করলাম। ৩৬ তম বিসিএসে লিখিত ফেল করলাম, ৩৭-এ এসে ক্যাডার হলাম আলহামদুলিল্লাহ। ৩৮ তম বিসিএসে জেনারেল ক্যাডারে লিখিত দিলাম।

নতুনদের উদ্দেশ্যে বলব  স্বপ্ন যদি পূরণ হওয়ার ইচ্চা থাকলে চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে,বিসিএস ক্যাডার হওয়ার স্বপ্ন যদি সতিকার অর্থেই থাকে তাহলে অসীম ধৈর্য ও পরিশ্রম করে দীর্ঘমেয়াদী প্রস্তুতি নেওয়া উচিত। বিসিএসে তাড়াহুড়োর স্থান নেই। একটা বিসিএস থেকে বাদ পড়লে দুই বছর পিছিয়ে যেতে হয়, তাই হতাশ হলে চলবে না। মনে আত্মবিশ্বাস রাখতে হবে যে আমি আজ হোক, কাল হোক  সফল হবোই। তাহলে একদিন সফলতা আসবেই।

আমি আমার বাবা-মা, ভাই বোনদের প্রতি কৃতজ্ঞ।কারণ বিসিএস এর জন্য চেষ্টা করতে গিয়ে বয়স শেষ হয়ে গেলেও তারা আমাকে কোন চাকরির জন্য চাপ দেননি। তারা আমার উপর আস্থা রেখেছিলেন। এছাড়া খারাপ সময়ে আমার কয়েকজন বন্ধু সার্বক্ষণিক পাশে ছিলেন তাদের প্রতি রইল আমার কৃতজ্ঞতা।

আমি শুধুই বিসিএসের স্বপ্ন নিয়েই পড়েছি। এ জন্য বন্ধুদের বিভিন্ন জায়গায় চাকরি হয়ে গেলেও আমাকে অনেক দিন অপেক্ষা করতে হয়েছে। এক পর্যায়ে বয়স ও ৩০ পার হয়ে যায়, পড়ে গেলাম মহা টেনশনে। নানা প্রকার মানসিক ও সামাজিক চাপ সহ্য করতে হয়েছে। অনেকে আড়াল থেকে কটু কথাও বলেছে। আমি শুধু আল্লাহর উপর ভরসা করেছি,আর নিরবে সব সহ্য করেছি। এখন সেই কটু কথা বলা লোকগুলাই আবার বাহবা দিচ্ছে।

সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা পেয়েছি আমার কাছের কয়েকজন মানুষের কাছ থেকে। তারা তাদের সাফল্যের পেছনের কারণ আমার সাথে শেয়ার করত আর আমাকে উৎসাহ দিত।

প্রতিটি সফলতার পেছনে না জানা অনেক গল্প থেকে যায়, তাই নিজের সে গল্প রচনা করার জন্য নিজেকে চেষ্টা চালিয়ে যেতে হয়। পরিবর্তন করতে হয় নিজেকে।


                                   ধন্যবাদ 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে ব্যাটালিয়ন আনসার(আর মাত্র ১৩ দিন বাকী)

বাসর রাতে সে এমন ভাবে করবে আমি বিশ্বাস করতে পারছি না, ছিঃ…

পুরুষদের ১ম চাহিদা আসলে কী, ফাঁস করলেন ১ জন যৌনকর্মী!

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ,আবেদন শুরু ১লা ডিসেম্বর ২০২১

মিথিলা ও সৌরভের আড়াই মিনিটের ভিডিও ফাঁস (ভিডিও)

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে সৈনিক পদে নিয়োগে করণীয়

সেই রাতেই হাসপাতালে ভর্তি হয় মিয়া খলিফা

যৌনকর্মে উপার্জন, নিরাপদ থাকতে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়

মঞ্চে দাঁড়িয়ে ভক্তের মুখে ‘প্রস্রাব’ করলেন গায়িকা (দেখুন ভিডিও'তে)

রাতে আমি খুব কষ্ট পেতাম,সহ্য করতে না পেরে তাকে ডিভোর্স দেই