জানা গেলো তিন কোটি টাকার গাড়ীর আসল রহস্য
আজ বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) সকালে গাড়ি বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান অটো মিউজিয়ামের কর্ণধার হাবিব উল্লাহ ডন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, গত বছর আমার গুলশানের শোরুমে পরীমণি আসেন। তিনি বিভিন্ন গাড়ি দেখেন, ফিয়াট অটোমোবাইলস-এর ‘মাসেরাতি’ ব্র্যান্ডের গাড়িটি তার পছন্দ হয়। আমি তখন বিদেশে, গাড়িটি নেওয়ার সময় আমার স্টাফরা তাকে জিজ্ঞাসা করেছিল- আপনি ক্যাশে নিবেন, নাকি ব্যাংক লোনে? পরীমণি তখন স্টাফদের পরে জানাবেন বলে গাড়িটি টেস্ট ড্রাইভে নিয়ে যান। আমার শো রুমের স্টাফ আমাকে বিষয়টি জানায়।আমি তখন উনি বাংলাদেশে একজন সুপার স্টার নায়িকা বলে এই বিষয়ে সম্মতি জানাই।
পরের দিন শোরুম থেকে পরীমণিকে আবার ফোন করা হয় উল্লেখ করে হাবিব উল্লাহ বলেন, তাকে শোরুম থেকে জানানো হয়, আপনি ক্যাশ অথবা ব্যাংক লোন যাতেই গাড়ি নেন না কেন, আপনাকে কিছু টাকা অ্যাডভ্যান্স করতে হবে। তখন পরীমণি আমার স্টাফকে ফোন দিয়ে বলেন, ‘আমি আপনাকে জানাচ্ছি।’ এরপর তিনি গাড়িটি ফিরিয়ে দিয়ে যান। একদিনই তার কাছে গাড়িটি রেখেছিলেন তিনি।’
‘টেস্ট ড্রাইভে’ গাড়ি নেওয়া স্বাভাবিক প্রক্রিয়া উল্লেখ করে এই ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমরা শোরুম থেকে ১০টা গাড়ি টেস্ট ড্রাইভের জন্য দিলে হয়তো দুটি গাড়ি বিক্রি হয়। বাকিগুলো ফেরত আসে।’
সম্প্রতি পরীমণি র্যাবের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর আবার তার সেই গাড়িটি আলোচনায় আসে। পরীমণিকে এক ব্যাংক কর্মকর্তা সাড়ে ৩ কোটি টাকা দামের গাড়িটি উপহার দিয়েছেন বলে গোয়েন্দাদের বরাত দিয়ে কয়েকটি গণমাধ্যমে খবরও প্রকাশ হয়। তবে এ তথ্যের সত্যতা মেলেনি। র্যাব পরীমণিকে গ্রেফতার করলেও তারা বাসা থেকে এরকম কোনও গাড়ি পায়নি। বাসার নিচে এমন নীল রঙের কোনও গাড়িও সেদিন দেখতে পায়নি গোয়েন্দারা।
গ্রেফতারের আগে পরীমণি তার টয়োটা হ্যারিয়ার গাড়িটিই ব্যবহার করছিলেন বলে তার গাড়ি চালকও জানিয়েছেন। পরীমণির গাড়ির বিষয়টি আলোচনায় আসে গত বছরের ২৪ জুন। ওইদিন তিনি দুর্ঘটনায় পরেন। এতে তার ব্যবহৃত টয়োটা হ্যারিয়ার মডেলের সাদা রঙের গাড়িটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গাড়িটির ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট দেন নিজেই।
এরপর ২৫ জুন পরীমনি ফেসবুকে একটি নীল রঙের গাড়ির সঙ্গে নিজের ছবি পোস্ট করেন। যার শোরুমের নম্বর প্লেটযুক্ত ছিল ঢাকা-শ/৪৬২। এর ক্যাপশনে তিনি লেখেন, ‘নয়া প্রেমিক- ফার্স্ট ডেট’। ওই পোস্টে হ্যাশট্যাগ দেন মাসেরাতি। তার গাড়িটি নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশও হয়। তবে গাড়ী কেনার কো সত্যতা পাওয়া যায়নি।
এই গাড়িটি তিনি নিজেই কেনার আগ্রহ দেখিয়েছিলেন বলে শোরুম মালিক নিশ্চিত করেছেন। তবে সেই প্রক্রিয়ার আর অগ্রসর হয়নি।
এদিকে পরীমণি বর্তমানে সিআইডির রিমান্ডে রয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) রিমান্ড শেষ হলে তাকে আদালতে নেওয়া হয়েছে। সেখানে তার আর পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার আজাদ রহমান বলেন, তদন্ত কর্মকর্তার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আরও সময় দরকার তাই পরীমণিসহ চারজনের পাঁচদিন করে রিমান্ড চাওয়া হয়েছে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন